মৃত ইচ্ছেদের কঙ্কাল যখন পাশ ফিরে শোয়
আমার ছিলো একটা সকাল। লালচে কেমন
গন্ধ-লাগা মিষ্টি-মতো মিঠে রোদের মিহি মিহি
স্পর্শ-লাগা সকাল ছিলো। বেড়ার ফাঁকে
লুকিয়ে আসা বিন্দু-বিন্দু রোদের ফোঁটায়
কাঁথার’পরে একটা কেমন অদ্ভুতুড়ে
ছবির মতন। সকাল ছিলো।
ভয় না-পাওয়া ভরদুপুরে শেওড়া গাছের
ফাঁক-ফোঁকরে একটা খালি ঘুঘুর বাসায়
একটা খালি বাচ্চা পাওয়ার ভীষণ আশায়
ডালের খোঁচায় গাল-চেরা এক দুপুর ছিলো;
হলদে রঙের। দুপুর ছিলো।
দু’চোখ ভরা ঘুমের শেষে হাই তোলা এক
বিকেল ছিলো। ব্যস্ত মায়ের আঁচল ধ’রে
কোলে ওঠার বায়না ধরা বিকেল ছিলো।
পক্ষিরাজের পাখায় চড়া সাতটি সাগর
তেরো নদী পার হওয়া এক রাত্রি ছিলো।
পিদিম-জ্বলা অন্ধকারে আলোর মৃদু
কাঁপন-লাগা ঘুমকাতুরে চোখের কোণে
অনাদরে জন্মে-থাকা ইচ্ছে-ভরা
রাত্রি ছিলো। ইচ্ছে ছিলো—
সকাল হবার, দুপুর-বিকেল-রাত্রি হবার।
ইচ্ছেগুলো ইট-পাথরের দেয়াল-ঘেরা
বদ্ধ ঘরে জীবন্ত আজ। মৃত আমি;
ইচ্ছে আমায় গল্প শোনায় সকাল-বিকেল
দুপুর-রাতের বেঁচে থাকার গল্প শোনায়।
ম’রে যাওয়ার গল্প শোনায়—“ইচ্ছে ছিলো…।”
ইচ্ছেরা নেই।